শেষ হলো মানারাত

শেষ হলো মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে বর্নাঢ্য সাংস্কৃতিক সপ্তাহ

03 March 2024
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে ছয় দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক সপ্তাহ ২০২৪ শেষ হয়েছে। খ্যাতিমান কবি, সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিকদের কবিতা আবৃত্তি ও পর্যালোচনা এবং 'একুশ শতকে বাংলা ভাষা, বই মেলা ও বই পড়া' শীর্ষক আলোচনার মধ্য দিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) এই বর্ণাঢ্য আয়োজন শেষ হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সাদেকা হালিম। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আব্দুছ ছবুর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক এবং প্রাবান্ধিক, গবেষক ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির পরিচালক খান মাহবুব। এছাড়া কবিতা আবৃত্তি ও পর্যালোচনায় অংশ নেন বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি বিমল গুহ, দৈনিক মাতৃভূমির সাবেক সাহিত্য সম্পাদক কবি দীলতাজ রহমান, সাবেক অতিরিক্ত সচিব কবি আমিনুল ইসলাম, সময় পূর্বাপরের সম্পাদক কবি হাসান মাহমুদ, সরকারি কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক খ্যাতিমান কবি রনজু রাইম, বাংলা একাডেমির ধান শালিকের দেশ-এর সহ-সম্পাদক শামস নুর এবং পশ্চিমবঙ্গের কবি ও নজরুল গবেষক ইনাস উদ্দিন প্রমুখ। এতে প্রধান অতিথি ‌প্রফেসর ড. সাদেকা হালিম 'ভাষা আন্দোলনে রফিক, জব্বার যারা শহীদ হয়েছেন তারা এ দেশে বহুমাত্রিকতার ও অনেক ধর্মের মানুষের একটি দেশ দেখতে চেয়েছেন' জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ একটি একক জাতি সত্বা বা একটি ধর্মের মানুষের দেশ নয়। হিন্দু, খৃস্টান, বৌদ্ধ সবার বাস এখানে। তাই আমরা মুসলমানরা বড় জাতি হিসেবে আমাদের আচরণ সৌহার্দ্যপূর্ণ হতে হবে। উশৃঙ্খল বা স্বেচ্ছাচারি হলে হবে না। তিনি শিক্ষকদেরকে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে সঠিক ও সত্য তথ্য তুলে ধরার আহবান জানিয়ে বলেন, আমাদের দেশের সংস্কৃতি খবুই সমৃদ্ধ। আসছে রোজায় মুসলমানরা রোজা রাখবেন, অন্যরা না রাখলেও ঈদ কিন্তু সবাই এক সঙ্গে মিলে-মিশে উদযাপন করবো। আমরা একে অপরের বাড়ি যাবো এটাই আমাদের সংস্কৃতি। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে নিজস্ব সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্যের বিষয়ে জোর দেয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, আমি আবুদাবিতে জাতিসংঘের এডুকেশন আর্ট অ্যান্ড কালচার নামের একটি সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলাম। সেখানে বলা হয়েছে প্রত্যেকটা লেখা পড়ার মধ্যেই সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিতে। তারা বলছে ভাস্কর্য শেখাতে, ড্রইং শেখাতে, আর্ট শেখাতে, ইতিহাস বলতে। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদেরকে জ্ঞান অর্জনের প্রতি গুরুত্ব দেয়ার আহবান জানিয়ে বলেন, আমি একজন শিক্ষক, তাও আমি প্রত্যেক দিন শিখছি। কারণ আমি সবজান্তা না। তাই তোমাদেরকেও শেখতে হবে। গালি-গালাজ করে না, অপরের সঙ্গে জ্ঞান ও যুক্তি দিয়ে লড়াই করতে হবে। কেবল দুর্বলচিত্তের মানুষই গালি-গালাজ করে। সভাপতির বক্তৃতায় প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আব্দুছ ছবুর খান সাংস্কৃতিক সপ্তাহ সফলভাবে আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের এই সপ্তাহব্যাপী আয়োজন ছিল তোমাদের জন্য। তোমাদের মধ্যে সংস্কৃতি, ভাষা, সাহিত্য, স্বদেশ নিয়ে যে বিভ্রান্তি ও সিমীত জ্ঞান ছিল। আমার মনে হয় এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে তা অনেকটা কাটতে শুরু করেছে। আমরা প্রত্যেকটা পার্বন ও সংস্কৃতির অনুসঙ্গকে এভাবেই তোমাদের সামনে নিয়ে আসবো। অনুষ্ঠানের মুখ্য আলোচক খান মাহমুদ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার আহবান জানিয়ে বলেন, বই পড়ার মাধ্যমে যে জাগরণ ও শক্তি মানুষ লাভ করে সেটা তাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যায়। একই সঙ্গে তিনি বই মেলার ব্যাপ্তি সারা বিশ্বে ছরিয়ে দেয়ার আহবান জানান। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সাংস্কৃতিক সপ্তাহ ২০২৪ এর আহবায়ক মোহাম্মদ নাজমুল হক শিকদার শিবলু। অনুষ্ঠান শেষে এই বর্ণাঢ্য আয়োজনে স্বেচ্ছাসেবক, কবিতা আবৃত্তি, সঙ্গীত পরিবেশন, উপস্থিত বক্তব্য প্রদান ও ডিজটিাল প্রচারণা করে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করার জন্য বিভিন্ন বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। ১৭ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই সাংস্কৃতিক সপ্তাহ শরু হয়। মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি কালচারাল ক্লাব এই সাংস্কৃতিক সপ্তাহের আয়োজন করে। এতে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে অংশ নিয়েছে শিক্ষা বিষয়ক অনলাইন নিউজ পোর্টাল দি ডেইলি ক্যাম্পাস।

Tags